একজন ব্র্যান্ড প্র্যাক্টিশনার এর জন্য মার্কেট ট্রেন্ডটাকে নিয়মিত ফলো করাটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর ফলে একদিকে আপনি মার্কেটকে বুঝে সেভাবে প্ল্যান সাজাতে পারবেন, অন্যদিকে ভবিষ্যতের জন্য কোন স্কিল বা রিসোর্স ডেভেলপ করাটা জরুরী সেটাও আইডেন্টিফাই করতে পারবেন।
ঈদের লম্বা ছুটিতে আমি অন্যান্য বেশ কিছু কাজের সাথে বাংলাদেশে 2022 সালের Digital Marketing Trend নিয়ে কিছুটা রিসার্চ এবং এনালাইসিস করার চেষ্ট করছিলাম। চলুন আজকে 5 টি important ট্রেন্ড নিয়ে কিছু খোলামেলা আলোচনা করা যাক, আশা করি আপনার ক্যারিয়ার এবং বিজনেস দুই ক্ষেত্রেই এই আলোচনা অত্যন্ত হেল্পফুল হবে।
1. Facebook still rules, and Metaverse will rise
অনেকেই ধারণা করেছিলেন ফেইসবুক declining stage এর দিকে যাবে। কিন্তু ফ্যাক্ট হচ্ছে আগামী কয়েক বছরেও সবচেয়ে বড় সোশ্যাল মিডিয়া হিসেবে ফেইসবুকের কোন রিপ্লেসমেন্ট আসার সম্ভাবনা খুবই কম। বরং ফেইসবুক এখন প্রচুর ইনভেস্ট করছে Metaverse এর পিছনে। এই মেটাভার্স সামনের দিনে game-changer হবে বিজনেসগুলোর জন্য।
জানুয়ারী 2022 সালে বাংলাদেশে 49.55 million সোশ্যাল মিডিয়া ইউজার ছিল, যা আমাদের টোটাল জনসংখ্যার 29.7%। এর মধ্যে ফেইসবুক ব্যবহারকারী 44.70 million, যার মধ্যে 31.6% নারী, এবং 68.4% পুরুষ।
যে কোন বিজনেস এর জন্যই ফেইসবুক (পড়ুন Meta) তাই সামনের দিনগুলোতেও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল মিডিয়া হিসেবেই থাকবে। কিন্তু ফেইসবুকের অর্গানিক রিচ, এলগরিদম, পলিসি এগুলোতে অনেক পরিবর্তন আসার কারণে আগের অনেক স্ট্র্যাটেজি এবং মেথডই এখন আর কাজ করে না। বিজনেসগুলোকে তাই আবার প্ল্যানিং বোর্ডে ফিরে যেতে হবে, স্ট্র্যাটেজি revamp করতে হবে। একজন ব্র্যান্ড প্র্যাক্টিশনার হিসেবে 2022 সালে আপনি ফেইসবুক এড এবং মার্কেটিং এর উপর এডভান্সড স্কিল তৈরিতে ফোকাস করতে পারেন।
2. Influencer marketing is the next big thing
বিশ্বজুড়েই মার্কেটাররা ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিংকে তাদের মার্কেটিং এর অন্যতম পার্ট হিসেবে এডপ্ট করে নিচ্ছে। সেদিন Forbes ম্যাগাজিন এ একটা আর্টিকেলে পড়ছিলাম যে 2022 সালে ব্র্যান্ডগুলো $15 billion ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর পিছনে ইনভেস্ট করবে।
আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণ influencer marketing হলেও ইন্ডাস্ট্রি পুরোপুরি ম্যাচিউর হয়নি। সঠিক influencer selection, স্পেসিফিক গোল, কাজের কোয়ালিটি, প্রফেশনালিজম, রেজাল্ট এই জায়গাগুলোতে প্রচুর ঘাটতি রয়েছে এবং কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
Influencer marketing কে একটা শর্ট টার্ম ট্যাকটিক চিন্তা না করে লংটার্ম স্ট্র্যাটেজি হিসেবে চিন্তা করতে হবে। এজন্য বিচ্ছিন্ন ভাবে কাজ না করে সময় নিয়ে ইন্টারন্যাল পলিসি, প্রসেস, গাইডলাইন ডেভেলপ করতে হবে। Micro এবং Nano-Influencers সাথে কিভাবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একযোগে কাজ করে রেজাল্ট বের করে আনা যায় সেই ফর্মুলাটা রপ্ত করতে হবে। শুধুমাত্র awareness স্টেজে ইনফ্লুয়েন্সারদেরকে ব্যবহার না করে কিভাবে মার্কেটিং ফানেল এর অন্যান্য স্টেজগুলোতেও ইফেক্টিভলি ব্যবহার করা যায় সেটা শিখতে হবে।
3. Digital marketers are getting more strategic
বাংলাদেশে প্রথম প্রথম যখন ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ শুরু হয়েছিল, তখন ডিজিটাল মার্কেটার এর সংখ্য ছিল অপ্রতুল। প্রাইমারী ফোকাস তাই ছিল টুলস শেখা। কিন্তু আমাদের দেশ ডিজিটাল মার্কেটিং এর শৈশবকাল পার হয়ে এসেছে, হামাগুড়ি দেয়া ছেড়ে উঠে এখন হাঁটতে শিখছে। Fcommerce এর বদৌলতে ডিজিটাল মিডিয়া টুলস ব্যবহার করতে পারে এমন ব্যক্তি এখন ঘরে ঘরে।
প্রফেশনাল ডিজিটাল মার্কেটার হতে চাইলে তাই এখন এর শুধু টুলস ব্যবহার কোনভাবেই যথেষ্ট না। বিজনেস গ্রোথ এবং প্রফেশনাল ক্যারিয়ার এর স্বার্থে মার্কেটারদেরকে এখন স্ট্র্যাটেজি ফোকাসড হতে হবে। এজন্য strategic thinking, বিভিন্ন strategic framework এর ব্যবহার ইত্যাদি স্কিল রপ্ত করতে হবে। সলিড ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি তৈরি করা শিখতে হবে।
আনফরচুনেটলি আমাদের দেশে এই রিলেটেড রিসোর্স এবং লার্নিং ম্যাটেরিয়াল এর এখনও প্রচন্ড অভাব। এই ঘাটতি দূর করার জন্য যোগ্য ব্যক্তি এবং অর্গানাইজেশনগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রত্যকে ব্র্যান্ড প্র্যাক্টিশনার কে স্কিল ডেভেলপমেন্টে আগ্রহী হতে হবে, সেই সাথে কোম্পানিগুলোকেও তাদের হিউম্যান রিসোর্সকে ট্রেইন করার জন্য সময় এবং অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।
Easy to implement hacks to improve traffic,
conversion and revenue online!
GET YOUR
FREE COPY NOW!
4. Customer Experience is the new social currency
প্যান্ডেমিক পরবর্তী দুনিয়াতে কাস্টোমাররা এখন অনেক বেশি সচেতন এবং সেনসিটিভ। প্রোডাক্ট এর সহজলভ্যতা বা প্রাইস এখন কোনমতেই ব্র্যান্ড চয়েজের জন্য deciding factor না। Advertising landscape যত বেশি noisy হবে, earned media এবং word of mouth তত বেশি গুরুত্বপূর্ণ হবে কাস্টোমারের কাছে পৌছাতে। মার্কেটারদেরকে তাই কাস্টোমারদের প্রতিটা টাচপয়েন্টে amazing customer experience তৈরিতে মনোযোগ দিতে হবে।
5. Data is the new Oil
দুনিয়াকে ইলেকক্ট্রিক কার আর মংগলগ্রহে যাবার স্বপ্ন দেখানো ইলন মাস্ক সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম Twitter কিনে নেবার পিছনের আসল রহস্য কি? 44 billion dollar শুধুমাত্র কি ফ্রি স্পিচ নিশ্চিত করার জন্য? শুধুমাত্র টুইটার কন্ট্রোল করলেই দুনিয়াতে ফ্রি স্পিচ নিশ্চিত হয়ে যাবে?
বিশ্বের এক নাম্বার ধনী ব্যক্তি ইতিহাসের সবচেয়ে খরুচে সোশ্যাল মিডিয়া acquisition ডিসিশন নেবার সময় তার জিনিয়াস বিজনেস মাইন্ড এবং বিজনেস ভিশন কাজে লাগান নি এটা হতেই পারে না।
ইলন আসলে কেন টুইটার কিনলেন সেটা নিয়ে অসংখ্য আলোচনা চলবে। কিন্তু একটা জিনিস ক্লিয়ার যে এই একটা ইনভেস্টমেন্ট থেকে তার এমন একটা জিনিসে একসেস হলো যেটা আগে ছিল না - Massive Data!
আমরা প্রায়ই Data Driven Marketing নিয়ে অনেক কথা বলি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এখন পর্যন্ত Data র সিকিভাগ পটেনশিয়ালও আমরা ব্যবহার করতে পারি নি। সেজন্য আমাদের যথেষ্ট রিসোর্স এবং দক্ষ্য জনবলও নেই। বিজনেস ওয়ার্ল্ডের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য অপরচুনিটিগুলোকে কাজে লাগাতে এই জায়গাটাতে আমরা অনেক বেশি ফোকাস করতে পারি। Big Data, AI, Machine Learning, Growth Hacking এগুলো শুধুমাত্র বাজওয়ার্ডে সীমাবদ্ধ না রেখে যতদ্রুত মেইনস্ট্রীম করতে পারবো ততই আমরা সামনের দিকে এগোতে পারবো।
Foundation Still Matters
যতই ট্রেন্ড নিয়ে আলোচনা করি, আমাদেরকে একটা কথা সবসময় মাথায় রাখতে হবে - মার্কেটিং এর ফাউন্ডেশনটা ঠিক মতো দাঁড় না করালে দুনিয়ার কোন মার্কেটিং টুলস, কোন ডিজিটাল চ্যানেলই আপনাকে বেস্ট রেজাল্টটা এনে দিতে পারবে না।
স্টোরিটেলিং, কপিরাইটিং, মার্কেটিং ফানেল, হিউম্যান সাইকোলোজি ইত্যাদি হচ্ছে ফাউন্ডেশন।
একটা শক্ত ফাউন্ডেশন এর উপর দাঁড়িয়ে ট্রেন্ডগুলোকে কেয়ারফুলি ফলো করে এবং সুযোগ বুঝে ব্যবহার করে এই কঠিন কম্পিটিশনের যুগেও পালে হাওয়া লাগিয়ে দ্রুত সামনে এগিয়ে যান এই শুভকামনা থাকলো।
(এই লেখাটি আমার নতুন অপিনিয়ন ভিত্তিক সিরিজের প্রথম পার্ট। চলুন কন্সট্র্যাক্টিভ এবং প্রোডাক্টিভ আলোচনার মাধ্যমে নলেজ শেয়ারিং করে নিজেদের আরো সমৃদ্ধ করে তুলি। আপনার মূল্যবান মতামত জানানোর আমন্ত্রণ রইলো।)